২৫ জুন যান চলাচলে খুলে দেয়ার অপেক্ষায় থাকা বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নিজ অর্থায়নে নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্বমঞ্চে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা সেনানিবাসে সোমবার সকালে সেনা সদরদপ্তর মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আর্মি হেডকোয়ার্টার সিলেকশন বোর্ড ২০২২-এর সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
পরে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের একটি সিদ্ধান্ত বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং জাতির আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক ব্যক্তির ইন্ধনে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে কোনো বোর্ড মিটিং ছাড়াই বিশ্বব্যাংক সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এই অভিযোগ পরে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।’
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে।’
জাতীয় পর্যায়ে ও সামাজিক ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অবকাঠামো নির্মাণসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রেখেছে।’
সেনাবাহিনীকে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির সময় সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ সবাই জনগণের কষ্টে পাশে দাঁড়িয়েছে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজন-সংক্রান্ত সরকারি পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিতে কক্সবাজারের খুরুশকুলে ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে।’
দেশে কেউ ভূমিহীন এবং গৃহহীন থাকবে না বলে নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সরকার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বিনা খরচে জমিসহ বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে নেতৃত্ব তৈরিতে পেশাদারি দক্ষতা, উৎকর্ষ, সততার ভিত্তিতে দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের মনে রাখতে হবে, নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে পেশাদার, দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা সম্ভব এবং পদোন্নতিতে উচ্চ নৈতিক চরিত্রের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমি আশা করি আপনারা সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।’
আনুগত্যসহ নেতৃত্বের দৃঢ় মানসিকতা, সততা এবং অন্যান্য গুণাবলিসম্পন্ন কর্মকর্তারা পদোন্নতির যোগ্য বলে মনে করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘সামরিক জীবনে যাদের সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেয়ার রেকর্ড আছে, এমন অফিসারদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা উচিত।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।